পশ্চিমাকাশের এক প্রজ্জ্বল নক্ষত্র
লেখকঃ রশীদ জামীল
আপাদমস্তক জেনারেল লাইনের একজন মানুষ ছিলেন। পড়ে গেলেন এক জহুরির নজরে। পাল্টে গেল জীবনের গতি, অথবা বলা যায় গতি পেল জীবন। ইউনিভার্সিটির পাশাপাশি হয়ে গেলেন তালিবুল ইলম। অ্যাট আ টাইম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স এবং লালবাগ জামেয়া থেকে দাওরায়ে হাদিস কমপ্লিট করলেন। কলেজে অধ্যাপনার পাশাপাশি হয়ে উঠলেন তাহকিক ও তাজদিদের অনুপম এক দৃষ্টান্ত।
আমেরিকায় ইলমে দ্বীনের কাজ করছেন তিন দশক ধরে। কাজ করে গেছেন নীরবে। তখন কাজ করা কঠিন ছিল। ইন্টারনেটের সয়লাব ছিল না। কম্পিউটার অন করে ঘরে বসে বিনা ওজুতে নসিহত বিলানোরও সুযোগ ছিল না। কাজ নিয়ে দৌড়াতে হত। আজ এখানে তো কাল ওখানে। একা ছিলেন তখন। পাশে দাঁড়াবার কেউ ছিলেন না।
আমেরিকায় আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের হয়ে যখন কথাবলার কেউ ছিলেন না, তখন মাওলানা মুহিব্বুর রহমান একা কথা বলেছেন। সালাফি লেবাসধারী খালফিরা যখন নর্থ আমেরিকায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠছিল, তখন এই লোকটি তাদের বিভ্রান্তির জবাবে দালিলিক শক্তিতে চষে বেড়িয়েছেন এক স্টেইট থেকে অন্য স্টেইটে। পত্রিকায় কলাম লিখে মানুষকে সতর্ক করেছেন। বই লিখে মানুষকে ফ্রি বিতরণ করেছেন। জায়গায় জায়গায় প্রোগ্রাম করে মানুষকে বুঝিয়েছেন।
গেল আট বছর কাছে থেকে দেখলাম। এই বয়সেও কাজ করেন নিরলস। রাতের পর রাত পার করে দেন কিতাব মু’তালাআয়। কথাটি আমি এর আগেও বলেছি। আমাদের যখন কোনো মাসআলার রেফারেন্স দরকার হয়, তখন ফোন দিই তাঁকে। তারপর আমরা ঘুমিয়ে যাই, তিনি আর ঘুমান না। ততক্ষণ, যতক্ষণ না হাওলা খুঁজে পেয়েছেন।
পশ্চিমাকাশের এই প্রজ্জ্বল নক্ষত্র অধ্যাপক মাওলানা মুহিব্বুর রহমান এক সংক্ষিত সফরে আজ সোমবার বাংলাদেশে যাচ্ছেন। আল্লাহপাক তাঁর সফরকে সহজ করে দিন। আফিয়াতের সাথে আবারও ফিরিয়ে নিয়ে আসুন। বৃষ্টি-বাদলের এই দেশে বেশিদিন ছাতাহীন থাকতে আমাদের ভালো লাগবে না।
0 Comments